এইচআরে ক্যারিয়ার গড়ার সম্ভাবনা

যে কোনো প্রতিষ্ঠানে এইচআর খুবই গুরুত্বপূর্র্ণ। মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ বা এইচআরডি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের নিয়ে কাজ করে। প্রতিষ্ঠানের কর্মী দলকে প্রকৃত মানবসম্পদে রূপান্তর করা এইচআরডির কাজ। দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করা, মানবসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা না গেলে কোনো প্রতিষ্ঠানের টেকসই প্রবৃদ্ধি সম্ভব নয়। যে কোনো প্রতিষ্ঠানের শুরুর দিকে বেশ গ্রোথ থাকে। নানাভাবে একটি প্রতিষ্ঠান বেশ
বড় হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু উপযুক্ত মানবসম্পদ না থাকলে যে কোনো সময় সে প্রতিষ্ঠান হোঁচট খেতে পারে। দক্ষ ও নিবেদিত জনবল যে কোনো প্রতিষ্ঠানের টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য জরুরি। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি, নিজ নিজ দক্ষতা ও যোগ্যতার সর্বোচ্চ ব্যবহারে তাদের উদ্বুদ্ধ করা এইচআরের দায়িত্ব। এইচআর প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করে। প্রতিষ্ঠানে মধ্যে এমন একটি সংস্কৃতি চালুর ব্যবস্থা করে যেটি প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যকে ধারণ করতে সহায়তা করে, কর্মীদের মধ্যে ওনারশিপ তৈরি হয়।
কর্মীদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে সহযোগিতার চেষ্টা করে এইচআর। কোনো সমস্যার সমাধান করা না গেলেও তার কারণে যাতে কর্মীদের মনে কাজের অনীহা তৈরি না হয়, প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ক্ষোভ ও ঘৃণার জš§ না দেখা দেয় মোটিভিশনের মাধ্যমে সেটি নিশ্চিতের চেষ্টা করে এইচআর।
কেউ যদি এইচআরে ক্যারিয়ার গড়তে চায়, তাহলে বিশেষ কোর্স ও অভিজ্ঞতা থাকলে ভালো। তবে না থাকলেও কোনো সমস্যা নেই। এ ক্ষেত্রে কাজের ব্যাপারে আগ্রহ ও শেখার নেশা থাকতে হবে। তার যে জায়গায় গ্যাপ থাকবে সেই জায়গা পূরণ করার আগ্রহ থাকতে হবে। এই পেশায় যারাই আসতে চাইবে তাদের প্রত্যেকেরই নিজের সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে। অবশ্যই বাজার সম্পর্কে, নিজের দক্ষতা সম্পর্কে এবং এ বিভাগের কাজ সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। ডিগ্রি না থাকলেও কোনো সমস্যা নেই।
এমন অনেকে আছে যারা কাজ করতে করতে নিজেদের তৈরি করে নিয়েছেন। শুধু এইচআর নিয়ে পড়াশোনা করাবে এমন কোনো প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে নেই তবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স এবং মাস্টার্সে সহযোগী বিষয় হিসেবে মানবসম্পদ বিভাগ পড়ানো হয়। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ ও বিবিএতে কোনো কোনো কোর্সও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত। বাংলাদেশে এইচআর বিভাগে কাজের সুযোগ, এই প্রফেশনে ক্যারিয়ার গড়ার সম্ভাবনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বলা যায়, এখানে অফুরন্ত সম্ভাবনা রয়েছে, প্রথমতো বিশ্বায়নের ফলে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছে। হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট নিয়ে আন্তর্জাতিক অনেক সেমিনার সিম্পোজিয়াম হচ্ছে। এর ফলে হিউম্যান রিসোর্স ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বেস্ট প্র্যাকটিসগুলো সম্পর্কে জানতে পারছে আমাদের উদ্যোক্তরা। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানের দ্বিতীয় প্রজন্মের উদ্যোক্তারা এস হাল ধরেছেন তাদের বেশরিভাগই উন্নত দেশগুলো থেকে পড়াশোনা করে এসেছেন। ফলে এরা এইচআরের গুরুত্ব সম্পর্কে অনেক সচেতন।
এছাড়া নতুন নতুন যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে সেগুলো অনেক বড় ও আন্তর্জাতিক মানের। সেসব প্রতিষ্ঠানও এইচআর প্রফেশনালদের যথেষ্ট চাহিদা তৈরি হয়েছে। যারা মানুষের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া পছন্দ করে তারা ক্যারিয়ার হিসেবে এইচআরকে বেছে নিতে পারে। এখানে মানুষের মধ্যে এত বেশি ভিন্নতা, এখান থেকে যে অভিজ্ঞতা হবে তা ব্যক্তি জীবনে কাজে লাগতে পারে। বিজনেসে কাজ করলে একটি নির্দিষ্ট জায়গাতে কাজ করা যায়। আর এইচআরে কাজ করলে বিভিন্ন পেশার এবং দক্ষতার মানুষদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ থাকে। একটি প্রতিষ্ঠানে ১০০ কর্মী থাকলে ১০০ রকম চিন্তা করে। এইচআরকে সব চিন্তার সমন্বয় করতে হয়। আর এটাই প্রফেশনে কাজ করার ভিন্নতা।