ইন্টেরিয়র ডিজাইন

যে কোনো শিল্পচর্চা যখন জীবনের শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যায় তখন সেটা পেশা থেকে নেশায় পরিণত হয়। নাচ, গান, কিংবা ডিজাইন, যে কোনো ও শিল্পচর্চা যখন সঙ্কীর্ণ গণ্ডি ছাড়িয়ে বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গি প্রাপ্ত হয় তখনই সে শিল্পের বিকাশ ঘটে।
বাসস্থান মানুষের মৌলিক চাহিদার একটি। নিজের বাড়ি মানুষ সব সময়ই মনের মতো করে তৈরি করতে চায়। এ জন্য বেছে নেয় ভালো স্থান এবং মনের মতো নকশা। শুধু
বাড়ি কেন আজকাল অফিস, রেস্তোরাঁ, শপিংমল, বিউটি পার্লার, ফ্যাশন হাউস, হাসপাতাল সব কিছুই মানুষ সাজাতে চায় নান্দনিকভাবে।
আর তাই ব্যবহারের উপযোগিতা, নান্দনিকতা, সৃজনশীল চিন্তাভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একজন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার সাধারণ জিনিসকে করে তুলতে পারে অসাধারণ। ইন্টেরিয়র ডিজাইন একটি সৃজনশীল কাজ।
আমাদের দেশে এটা কিছুদিন হলো শুরু হয়েছে কিন্তু প্রাচ্য দেশে এর প্রচলন অনেক আগে থেকেই চালু।
কেউ হয়তো সঠিকভাবে জানেও না যে আসলে কবে এর প্রচলন প্রথম শুরু হয়েছে। ইতিহাসের কথা বললে বলা যায়, ইজিপশিয়ান এবং রোমান যুগ থেকে এর যাত্রা শুরু। আমাদের দেশে বর্তমানে ইন্টেরিয়র ডিজাইনিংয়ের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। কারণ মানুষ এখন অনেক সচেতন। প্রতিটি স্পেস কিভাবে কাজে লাগানো যায় সেদিকে রয়েছে সতর্ক দৃষ্টি। সৃজনশীলতার পাশাপাশি একজন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার আরো যে সব বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকেন সেগুলো হলো- স্পেস প্ল্যানিং, কালার স্কিম, ফার্নিচার ডিজাইন, ফেব্রিকস, লাইটিং, ফোরিং ইত্যাদি। ইন্টেরিয়র ডিজাইন এখন একটি চাহিদাসম্পন্ন সম্ভাবনামাত্র।
ইন্টেরিয়র বিশেষজ্ঞরা জানান, এই পেশায় যদি কেউ তার ক্যারিয়ার গড়তে চায় তবে বিভিন্ন আর্কিটেকচারাল ফার্ম, রিয়েল এস্টেট কোম্পানি, ডিজাইনিং ফার্ম, পেইন্ট কোম্পানিগুলোতে কাজের সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া এই পেশায় রয়েছে ফ্রিল্যান্স পেশাজীবী হিসেবে কাজ করার সুযোগ।
একজন ইন্টেরিয়র ডিজাইনারের প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি থাকতে হবে আন্তরিকতা, দক্ষতা সৃজনশীলতা, আগ্রহ এবং সর্বোপরি অন্যের পছন্দকে বোঝার মতো। দেশের বাইরে গিয়েও অর্থ উপার্জন করতে পারেন। অনলাইনে কাজ করারও যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। তবে তার জন্য থাকতে হবে সৃষ্টিশীল মন।
কাজের প্রতি একাগ্রহ, ধৈর্য এবং মনোযোগ। একজন ডিজাইনারের বেতনটাও শুরু হয় বেশ ভালো স্কেল থেকে। শুরুতেই ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকার কাজ করার সুযোগ রয়েছে। আর কাজের দক্ষতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেতনও বাড়ে অবশ্যম্ভাবীভাবে।
যে কোনো বয়সের মানুষই যে কোনো সময় এই পেশাকে বেছে নিতে পারেন। এ পেশায় প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি লাভ করার জন্য তাকে নূন্যতম এইচএসসি পাস হতে হবে। অন্য অনেক বাঙালি নারীর মতো সাংসারিক কাজের মাঝে নিজেকে সীমাবদ্ধ না রেখে যে কোনো নারীই এটাকে পেশা হিসেবে নিতে পারেন তার কর্মসংস্থানের জন্য।